যেভাবে শুরু করবেন বিসিএস প্রস্তুতি (BCS Preparation)

0
571

বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এবং প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষা হল বিসিএস- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা। প্রতিবছর লাখো প্রার্থী আবেদন করেন। ক্যাডার হওয়ার সুযোগ পান মাত্র ২ হাজারের মত।
১টি ক্যাডারের বিপরীতে যেখানে পরীক্ষা যুদ্ধ করেন ২৭০ জনের ও বেশি প্রার্থী! ভাবা যায়?
প্রার্থীদের সংখ্যাটা দিন দিন বাড়লেও ক্যাডারের সংখ্যা বাড়ছে না, তাই প্রতিযোগিতার মাত্রা অকল্পনীয়। এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে চাই প্রচুর পড়াশুনা।
অধ্যবসায়, নিয়মমাফিক বিসিএস প্রস্তুতি ছাড়া বিসিএস ক্যাডার হওয়া অসম্ভব।

বাংলাদেশের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ চাকরি বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য দৌড় ঝাপ শুরু করতে হয় অনেক আগে থেকেই। যে যত বেশি পড়বে তার টিকে যাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি।

তো আসুন জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে শূন্য থেকে প্রস্তুতি শুরু করবেনঃ—

ধাপ-১: প্রথমে বিসিএস প্রিলির সিলেবাস ভালো করে দেখুন এবং বিগত সালের প্রশ্নগুলো ভালোভাবে দেখুন। বিসিএসে কী ধরনের প্রশ্ন হয় ধারণা পেয়ে যাবেন এবং বিগত সালের প্রশ্ন থেকে অনেক কমনও পাবেন পরীক্ষায় প্রশ্ন রিপিট হলে। বিগত সালের প্রশ্নগুলো ব্যাখ্যাসহ পড়ুন। হাতে বেশি সময় না থাকলে অত্যন্ত ৩৫তম-৪২তম বিসিএস প্রিলি পর্যন্ত ব্যাখ্যাসহ পড়ুন। কারণ এগুলো বিসিএস প্রিলির নতুন সিলেবাস অনুযায়ী। এর জন্য প্রফেসর’স বিসিএস প্রশ্ন ব্যাংক বা ওরাকল প্রিলি প্রশ্ন ব্যাংক অথবা অ্যাসিওরেন্স প্রিলি প্রশ্ন ব্যাংক থেকে পড়তে পারেন। তাছাড়া কারও কাছে জব সল্যুশন থাকলে সেখান থেকেও পড়ে নিতে পারেন।

ধাপ-২: এরপর ‘বিসিএস প্রিলিমিনারি অ্যানালাইসিস’ বইটির এ টু জেড ভালোভাবে বুঝে বুঝে শেষ করুন অন্তত দুইবার। বইটি শেষ করলে বিসিএস প্রিলি সম্পর্কে আপনি একেবারে ক্লিয়ার হয়ে যাবেন। বিসিএস প্রিলি নিয়ে আপনার যে ভয় আছে, তা কেটে যাবে এবং নিজের প্রতি বিশ্বাস অনেক বেড়ে যাবে।

ধাপ-৩: এরপর বাজার থেকে যেকোনো ভালো সিরিজের (যেমন এমপিথ্রি/প্রফেসর’স/অ্যাসিওরেন্স/ওরাকল) প্রিলির আলাদা বিষয়ের সিলেবাসের সাথে মিল রেখে টপিকগুলো পড়ে ফেলুন। গুরুত্বপূর্ণ টপিক বা অধ্যায়ের ওপর বেশি জোর দিন। বিশেষত যে টপিক বা অধ্যায় থেকে প্রায় প্রতিবার প্রশ্ন আছে, সেই টপিক বা অধ্যায়গুলো। মনে রাখতে হবে, প্রতি বিসিএস প্রিলিতে কিন্তু প্রিলির সিলেবাসের সব টপিক বা অধ্যায় থেকে প্রশ্ন আসে না। এক সেট প্রিলির বইয়ের পাশাপাশি নবম-দশম শ্রেণির ‘ভূগোল ও পরিবেশ’ বইটি ভালোভাবে পড়ুন। এ বই থেকে প্রিলির ‘ভূগোল ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা’ অংশের হুবহু অনেক প্রশ্ন কমন আসে।

ধাপ-৪: বিগত সালের বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষা থেকে যেহেতু অনেক প্রশ্ন রিপিট হয়, সেজন্য জব সল্যুশন পড়ুন। এখানে বিগত সালের বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার ব্যাখ্যাসহ সমাধান পাবেন। এ ক্ষেত্রে প্রফেসর’স জব সল্যুশন বা ওরাকল জব সল্যুশন যেকোনো একটি ফলো করতে পারেন।

ধাপ-৫: তারপর বাজার থেকে বিসিএসের ভালো মানের একটি বা দুটি মডেল টেস্ট (বিসিএস রিয়াল মডেল টেস্ট বইটি ও সাথে অন্য যেকোনো ভালো মানের মডেল টেস্ট বইয়ের সাহায্য নিতে পারেন) নিয়ে সময় ধরে পরীক্ষা দিন। তারপর দেখুন কোন বিষয়ে কত পান। যে বিষয়ে কম পাবেন, সেই বিষয় ভালোভাবে শেষ করুন, বিষয়টিতে জোর দিন।

ধাপ-৬: প্রতিদিন একটি বাংলা ও ইংরেজী পত্রিকা পড়া উচিত। পত্রিকার গুরুত্ব অপরিসীম। পত্রিকার লিখা পড়লে বিসিএস এর লিখিত পরীক্ষায় অনেক কাজে দিবে। তাছাড়া বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় বাংলাদেশ বিষয়াবলি ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি থেকে প্রশ্ন আসে। এই ২ বিষয়ের প্রশ্নগুলো সাধারনত পত্রিকা থেকেই করেন প্রশ্ন কর্তারা। তাই নিয়মিত পত্রিকা পড়লে এগুলো থেকে সহজেই উত্তর করা যাবে। যাদের পত্রিকা পড়ার অভ্যাস নেই বা পড়ার সুযোগ নেই। তারা মাসিক কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স পড়ুন।

এছাড়া যে কাজটি করবেন, ৪র্থ-১০ম শ্রেণির ম্যাথগুলো শেষ করুন এবং ৯ম-১০ম শ্রেণির ভূগোল ও পরিবেশ, বাংলা ব্যাকরণ বইটি সাথে রাখবেন। আর পরীক্ষার কিছুদিন আগে সাম্প্রতিক সাধারণ জ্ঞানের জন্য একটি বই পড়তে পারেন। এখন সাম্প্রতিক সাধারণ জ্ঞান পড়লে, পরে আবার পড়া লাগতে পারে। কারণ সাম্প্রতিক সাধারণ জ্ঞান প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

4 + thirteen =